একদিন বাবা ছেলেটিকে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ভবিষ্যতে তার ছোট ছেলেটির কোন পেশা বেছে নেয়া উচিত? শিক্ষক এক বাক্যে জবাব দিয়েছিলেন, “সে যে পেশাই হোক, তাতে কিছু এসে যায় না, কারণ কোনোটিতেই ও কোন কিছু করতে পারবে না।” এমন অকাট্য উত্তর সেদিনের সেই প্রধান শিক্ষকের! শুধু তাই নয় একবার স্কুল থেকে “ক্লাসে তোমার উপস্থিতি অন্যান্য ছাত্রদের প্রভাবিত করছে” বলে তাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ তিরস্কার করে।
সেই ছেলেই বড় হয়ে এমন অসাধ্য সাধন করলেন, বিজ্ঞান জগতে মহাবিপ্লব বললেও অত্যুক্তি হয় না। বিশ্ব ও জগত সম্পর্কে নিউটনের ধারণাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়ে আবিষ্কার করলেন ‘থিওরি অফ রিলেটিভিটি’- আপেক্ষিকতাবাদ। তিনি বলেন, এই যে চোখের সামনে আমরা বস্তুর গতি ও শক্তি, ‘টাইম’ ও ‘স্পেস’ অর্থাৎ সময় ও স্থানকে দেখছি, কোনোটাই ‘অ্যাবসলিউট’ বা অপরিবর্তনীয় নয়, ধ্রুব নয়, সবই আপেক্ষিক। বস্তুর গতি আর তার সাথে পর্যবেক্ষকের অবস্থানের পরিবর্তনে বদলে যায় সবকিছু। শুধু বদলায় না আলোর গতিবেগ।
‘কিছুই হবে না’ বলে ঘোষণা করে দেওয়া মাস্টার মশাইয়ের সেই ছাত্রটি আর কেউ নন, তিনি মহাবিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী যাকে ‘শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি বিজ্ঞান ভাবনায় এতই মগ্ন থাকতেন যে, কথিত আছে, বাইরে বেরিয়ে কখনও কখনও বাড়ি ফেরার পথও হারিয়ে ফেলতেন তিনি।
বিজ্ঞানীর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ
নাম- স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন
জন্ম- ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ, জার্মানির উলম শহরে এক ইহুদী পরিবারে
সেই ছেলেই বড় হয়ে এমন অসাধ্য সাধন করলেন, বিজ্ঞান জগতে মহাবিপ্লব বললেও অত্যুক্তি হয় না। বিশ্ব ও জগত সম্পর্কে নিউটনের ধারণাকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়ে আবিষ্কার করলেন ‘থিওরি অফ রিলেটিভিটি’- আপেক্ষিকতাবাদ। তিনি বলেন, এই যে চোখের সামনে আমরা বস্তুর গতি ও শক্তি, ‘টাইম’ ও ‘স্পেস’ অর্থাৎ সময় ও স্থানকে দেখছি, কোনোটাই ‘অ্যাবসলিউট’ বা অপরিবর্তনীয় নয়, ধ্রুব নয়, সবই আপেক্ষিক। বস্তুর গতি আর তার সাথে পর্যবেক্ষকের অবস্থানের পরিবর্তনে বদলে যায় সবকিছু। শুধু বদলায় না আলোর গতিবেগ।
‘কিছুই হবে না’ বলে ঘোষণা করে দেওয়া মাস্টার মশাইয়ের সেই ছাত্রটি আর কেউ নন, তিনি মহাবিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী যাকে ‘শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি বিজ্ঞান ভাবনায় এতই মগ্ন থাকতেন যে, কথিত আছে, বাইরে বেরিয়ে কখনও কখনও বাড়ি ফেরার পথও হারিয়ে ফেলতেন তিনি।
বিজ্ঞানীর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ
নাম- স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন
জন্ম- ১৮৭৯ সালের ১৪ মার্চ, জার্মানির উলম শহরে এক ইহুদী পরিবারে
মৃত্যু- ১৯৫৫ সালের ১৮ এপ্রিল
বাসস্থান- জার্মানী, ইটালি, সুইজারল্যান্ড, আমেরিকা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়, লিডেন বিশ্ববিদ্যালয়
বেদনাপূর্ণ প্রাথমিক জীবন:
অ্যালবার্টকে প্রথম স্কুলে পাঠানো হয় পাঁচ বছর বয়সে। ১০ বছর বয়সে ভর্তি হন হাই স্কুল লুটিগোল্ড জিমনেশিয়ামে। স্কুলের ধরা-বাধা পড়াশুনা তার কখনোই ভালো লাগেনি। স্কুলের পড়াশুনায় খুব একটা ভালো ছিলেন না। ক্যাথলিক স্কুলের অতিরিক্ত কড়াকড়িও তার ভীষণ অপছন্দ ছিল। শিশু আইনস্টাইনের বিচিত্র চরিত্রকে সেই দিন উপলব্ধি করা সম্ভব হয়নি তার অভিভাবক, তার শিক্ষকদের। তার স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে মাঝে মাঝেই অভিযোগ আসত, পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া ছেলে, অমনোযোগী, আনমনা ইত্যাদি। এতে করে বেস বিরক্ত হতেন তিনি। ক্লাসের কেউ তার সঙ্গী ছিল না। সকলের শেষে পেছনের বেঞ্চে গিয়ে বসতেন এবং কিছু না কিছু ভাবতে থাকতেন। তার একমাত্র সঙ্গী ছিল তার মা। তিনি ভালো বেহালা বাজাতে পারতেন। আইনস্টাইন তার কাছে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের নানা সুর শুনতেন। এই বেহালা ছিল আইনস্টাইনের আজীবন কালের সাথী। বাবাকে খুব বেশি একটা কাছে পেতেন না আইনস্টাইন। নিজের কারখানা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন তিনি।
আনন্দেই কাটছিল তার জীবন।সেই আনন্দে ভরা দিনগুলোর মাঝে হঠাৎ কালো দিন ঘনিয়ে এল। তাই সেই শৈশবেই আইনস্টাইন প্রথম অনুভব করলেন জীবনের তিক্ত স্বাদ। তারা ছিলেন ইহুদি। কিন্তু স্কুলে ক্যাথলিক ধর্মের নিয়মকানুন মেনে চলতে হতো।স্কুলের সমস্ত পরিবেশটাই বিষাদ হয়ে গিয়েছিল তার কাছে। দর্শনের বই তাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করত। পনেরো বছর বয়সের মধ্যে তিনি কান্ট, স্পিনোজা, ইউক্লিড, নিউটনের রচনা পড়ে শেষ করে ফেললেন। বিজ্ঞান, দর্শনের সাথে পড়তেন গ্যেটে, শিলার,শেক্সপিয়ারের বই সমূহ। অবসর সময়ে বেহালায় বিটোফোন, মোতসার্টের সুর তুলতেন। এরাই ছিল তার সঙ্গী বন্ধু, তাঁর জগৎ। এভাবেই তিনি সময় কাটাতেন।এই সময় বাবার ব্যবসায় মন্দা দেখা দিল। তিনি স্থির করলেন মিউনিখ ছেড়ে মিলানে চলে যাবেন। তাতে যদি ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। সকলে মিউনিখ ত্যাগ করল, শুধু সেখানে একা রয়ে গেলেন আইনস্টাইন।সুইজারল্যান্ডের একটি পলিটেকনিক স্কুলে ভর্তি হলেন। প্রথমবার তিনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলেন না। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পরীক্ষায় পাস করলেন। বাড়ির আর্থিক অবস্থা ক্রমশই খারাপ হয়ে আসছে। আইনস্টাইন অনুভব করলেন সংসারের দায়-দায়িত্ব তাকে গ্রহণ করতেই হবে।
শিক্ষকতার বৃত্তি গ্রহণ করার জন্য তিনি পদার্থবিদ্যা ও গণিত নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন। জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে শিক্ষকতার জন্য বিভিন্ন স্কুলে দরখাস্ত করতে আরম্ভ করলেন। অনেকের চেয়েই শিক্ষাগত যোগ্যতা তার বেশি ছিল কিন্তু কোথাও চাকরি পেলেন না। কারণ তার অপরাধ তিনি ইহুদি।নিরুপায় আইনস্টাইন খরচ চালানোর প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র পড়াতে আরম্ভ করলেন। এই সময় আইনস্টাইন তার স্কুলের সহপাঠিনী মিলেভা মারেককে বিয়ে করলেন। তখন তার বয়স মাত্র ২২ বছর। মিলেভা শুধু আইনস্টাইনের স্ত্রী ছিলেন না, প্রকৃত অর্থেই তার জীবনসঙ্গী ছিলেন।আইনস্টাইন বুঝতে পারলেন শিক্ষকতার কাজ পাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। একটি অফিসে ক্লার্কের চাকরি নিলেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজের খাতার পাতায় সমাধান করতেন অঙ্কের জটিল তত্ত্ব। স্বপ্ন দেখতেন প্রকৃতির দুর্জ্ঞেয় রহস্য ভেদ করার। তার এই গোপন সাধনার কথা শুধু মিলেভাকে বলেছিলেন, ‘আমি এই বিশ্বপ্রকৃতির স্থান ও সময় নিয়ে গবেষণা করছি।’
আইনস্টাইনের এই গবেষণায় ছিল না কোনো ল্যাবরেটরি, ছিল না কোনো যন্ত্রপাতি। তার একমাত্র অবলম্বন ছিল খাতা-কলম আর তার অসাধারণ চিন্তাশক্তি। অবশেষে শেষ হলো তার গবেষণা। তখন তার বয়স মাত্র ২৬ বছর। একদিন ত্রিশ পাতার একটি প্রবন্ধ নিয়ে হাজির হলেন বার্লিনের বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক পত্রিকা Annalen der physik-এর অফিসে। এই পত্রিকায় ১৯০১ থেকে ১৯০৭ পর্যন্ত আইনস্টাইন পাঁচটি রচনা প্রকাশ করলেন। এসব রচনায় প্রচলিত বিষয়কে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এতে আইনস্টাইনের নাম বিজ্ঞানী মহলে ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কোনো সুরাহা হলো না। নিতান্ত বাধ্য হয়ে বাড়িতে ছাত্র পড়ানোর কাজ নিলেন।
একদিকে অফিসের কাজ, মিলেভার স্নেহভরা ভালোবাসা, অন্যদিকে বৈজ্ঞানিক গবেষণা অবশেষে ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হলো তার চারটি রচনা- প্রথমটি আলোর গঠন ও শক্তি সম্পর্কে। দ্বিতীয়টি অ্যাটমের আকৃতি-প্রকৃতি। তৃতীয়টি ব্রাউনিয়াম মুভমেন্টের ক্রমবিকাশের তত্ত্ব। চতুর্থটি তার বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব। যা বিজ্ঞানের জগতে এক নতুন দিগন্ত উদ্ভাসিত করল। এই আপেক্ষিকতা বলতে বোঝায় কোনো বস্তুর সঙ্গে সম্বন্ধ বা অন্য কিছুর তুলনা। আইনস্টাইন বললেন আমরা যখন কোনো সময় বা স্থান পরিমাপ করি তখন আমাদের অন্য কিছুর সঙ্গে তুলনা করতে হবে। তিনি বলেছেন আলোক বিশ্বজগৎ, কাল এবং মাত্রা আপেক্ষিক।আমাদের মহাবিশ্বে একটি মাত্র গতি আছে যা আপেক্ষিক নয়, অন্য কোনো গতির সঙ্গেও এর তুলনা হয় না-এই গতি হচ্ছে আলোকের গতি। এই গতি কখনোই পরিবর্তন হয় না।
চাকরি ও পরবর্তী জীবনঃ
এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সুপারিশে সুইজারল্যান্ডের বার্নে পেটেন্ট অফিসে আইনস্টাইন একটি চাকরি পান। তার প্রধান কাজ ছিল পেটেন্ট সংক্রান্ত আবেদনগুলি পরীক্ষা করা। আইনস্টাইন সুইস পেটেন্ট অফিসে ছিলেন ১৯০২ সাল থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত।
মজার কথা হলো, ল্যাবরেটরিতে প্রথাগত গবেষণা তিনি কখনই করেননি। মস্তিষ্ক ছিল তার ল্যাবরেটরি। আর যন্ত্রপাতি বলতে ছিল পেন্সিল আর কলম। তার পরীক্ষা সব ছিল চিন্তার জগতে, যাকে বলা হয় ‘থট এক্সপেরিমেন্ট’।
মজার কথা হলো, ল্যাবরেটরিতে প্রথাগত গবেষণা তিনি কখনই করেননি। মস্তিষ্ক ছিল তার ল্যাবরেটরি। আর যন্ত্রপাতি বলতে ছিল পেন্সিল আর কলম। তার পরীক্ষা সব ছিল চিন্তার জগতে, যাকে বলা হয় ‘থট এক্সপেরিমেন্ট’।
এ সময়েই পর পর আইনস্টাইনের কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ছিল ডক্টরেট ডিগ্রীর জন্য থিসিস, ‘ফটো ইলেকট্রিক ইফেক্ট’ অর্থাৎ আলোক তড়িৎ প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ এবং ‘স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটি’ বা বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ। জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ডক্টরেট পেয়ে যান সহজেই।
![]() |
আইনস্টাইন এর নোবেল পুরস্কার |
১৯২১ সালে ফটো ইলেকট্রিক ইফেক্টের কাজের জন্যেই নোবেল পুরস্কার পান। তবে ১৯০৫ সালে তা;র প্রকাশিত বিশেষ আপেক্ষিকতাবাদ বিজ্ঞানী মহলে তাকে খ্যাতি এনে দেয়। এ সমস্ত গবেষণাপত্র অতি উচ্চ গণিতের ভাষায় লেখা, গণিতের বিশেষ জ্ঞান ছাড়া যা বোঝা সম্ভব নয়। তবে বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের মূল কথাটি কঠিন নয়। যার সার কথা হলো- আলোর গতিবেগই চরম এবং ধ্রুব। আলোর উৎস বা পর্যবেক্ষকের অবস্থান ও গতিবেগ বদলালেও আলোর বেগ একই থাকে।
বস্তুর গতিবেগ যতই বাড়ে, ততই তার দৈর্ঘ্য কমে আর ভর বাড়তে থাকে, কমতে থাকে সময়ের চলন। গতিশীল বস্তুর সাথে জুড়ে দেওয়া ঘড়ি ক্রমশ ‘ধীরে’ চলবে।
;![]() |
E=mc^2 |
অতি বেগবান কোনো মহাকাশযানের যাত্রীরা কয়েক বছর ঘুরে পৃথিবীতে ফিরে এসে দেখবেন তাদের আত্মীয় স্বজনেরা কেউ আর বেঁচে নেই। অথচ তাদের নিজেদের বয়স তেমন কিছুই বাড়েনি। এই তত্ত্বেই আছে বস্তু ও শক্তির সম্পর্ক নির্ণায়ক বিখ্যাত সমীকরণ E=mc^2, যেখানে E হলো বস্তুর মধ্যে নিহিত শক্তি, m বস্তুর ভর এবং c আলোর গতিবেগ।
১৯১৬ সালে আইনস্টাইন আবিষ্কার করলেন আরেকটি যুগান্তকারী আবষ্কার, ‘জেনারেল থিওরি অফ রিলেটিভিটি’ বা সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব। তাতে তিনি মহাকর্ষের সম্পূর্ণ নতুন সংজ্ঞা দিয়েছেন। বলেছেন, মহাকর্ষ বা অভিকর্ষ হলো ‘স্পেস টাইম’ অর্থাৎ সময় ও স্থান মিলিয়ে এক বিশেষ ক্ষেত্রের বিকৃতি থেকে উদ্ভূত টান।
আইনস্টাইন বিশ্বাসই করতেন না তার E=mc^2 সূত্রটি পরীক্ষাগারে প্রমাণ করা সম্ভব, আর সেটা দিয়ে পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব হবে। ১৯৪০ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান আইনস্টাইন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে চুল সাদা হয়ে যাওয়া মানুষটি এক সময় বিজ্ঞান মনীষী হিসেবে স্বীকৃত হন সারা বিশ্বে। বাকি জীবন তিনি এখানেই কাটান। ১৯৫৫ সালে মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত তার ৫০টিরও অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন এর জীবনের কিছু মজার ঘটনাঃ
আইনস্টাইন সাহেবের লাইফে অনেক মজার মজার ঘটনা আছে।
১. আইনস্টাইন বিশ্বখ্যাত তাঁর আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্য। ১৯৩০-এর দশকে সরবোনে (Sorbonne) বক্তৃতা দেওয়ার সময় এ বিষয়ে বলেন, ‘যদি আমার আপেক্ষিক তত্ত্ব সত্য প্রমাণিত হয়, তবে জার্মানি আমাকে জার্মান হিসেবে দাবি করবে। আর ফ্রান্স বলবে যে আমি পুরো বিশ্বের নাগরিক। কিন্তু যদি তত্ত্বটা ভুল প্রমাণিত হয়, তবে ফ্রান্স বলবে, আমি একজন জার্মান এবং জার্মানি বলবে আমি হলাম ইহুদি।’
২. এক সহকর্মী আইনস্টাইনের কাছে একবার তাঁর টেলিফোন নম্বরটা চাইলেন। তখন আইনস্টাইন একটা টেলিফোন বই খুঁজে বের করলেন এবং সে বইতে তাঁর নম্বরটা খুঁজতে লাগলেন। তখন সহকর্মীটি বললেন,‘কী ব্যাপার, নিজের টেলিফোন নম্বরটাও মনে নেই আপনার?’ আইনস্টাইন বললেন, ‘না। তার দরকারই বা কী? যেটা আপনি বইতে পাবেন, সে তথ্যটা মুখস্থ করে মস্তিষ্ক খরচ করবেন কেন?’
৩. একবার আইনস্টাইনকে সফলতা লাভের একটি গাণিতিক ফর্মুলা দিতে বলা হল। তিনি বলেছিলেন,’’ X+Y+Z=A, যেখানে X=কাজ, Y=খেলাধুলা আর A=সফলতা।‘’ ‘’আর মানে Z কী?’’ আবারও জিজ্ঞেস করা হল তাঁকে। ‘’তোমার মুখ বন্ধ রাখা‘’, আইনস্টাইনের উত্তর।
৪. ১৯৩৫ সালে প্রিন্সটনে পৌঁছানোর পর গবেষণার জন্য তাঁর কী কী প্রয়োজন হবে জিজ্ঞেস করা হলে আইনস্টাইন জানালেন, ‘একটি ডেস্ক, কিছু প্যাড, একটা পেন্সিল আর সব শেষে আমার ভুলগুলো ফেলার জন্য বিশাল একটা ময়লার ঝুড়ি।
৫. গুজব আছে, সুন্দরী অভিনেত্রী মেরিলিন মনেরো আইনস্টাইনের প্রতি দুর্বল ছিলেন।তাই একদিন মনেরো আইনস্টাইনকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন এইভাবে, ‘’চলুন না, আমরা বিয়ে করে ফেলি? তাহলে আমাদের সন্তানেরা হবে সৌন্দর্য ও জ্ঞানে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। ওরা দেখতে আমার মত আর বুদ্ধিতে আপনার মত।‘’ আইনস্টাইন তৎক্ষণাৎ বললেন, ‘’আর যদি উল্টোটা হয়? দেখতে আমার মত আর বুদ্ধিতে আপনার মত?‘’ এর উত্তরে মনেরো কী বলেছিলেন তা অবশ্য আমি অনেক চেষ্টা করেও জানতে পারিনি।
সম্পাদনায়: আমিরুল ইসলাম আল মামুন
তথ্য ও ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট
|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন