মেডিকেলে চান্স পাই নি। অথচ আমার কোনো দুঃখ থাকার কথা ছিল না। আত্মীয়-স্বজন-বন্ধুরা ফোন করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়েঁ, "ইশ,দোস্ত,কত আশায় ছিলাম তোকে নিয়ে। তুই টিকলি না।" তাদের কষ্ট দেখে আমার খুব কষ্ট হয়। কেন যে আমি টিকলাম না! অন্তত বাবা-মা এই দশ-পাচঁদিন গর্ব করে বেড়ানোর জন্য হলেও আমার মেডিকেলে টিকাটা উচিত ছিল। টিকলাম না তো! মেডিকেলে পড়ার ইচ্ছে থাকলে তো মেডি কোচিং করতাম। এটা এখন অজুহাত হতে পারে না, টিকলে হতে পারতো হয়তো।
.
মা খুব আগ্রহে ছিল। তাকে ফোন করে সহজভাবে বললাম- "টিকি নাই!" মা বিশ্বাস করে না। বলে, "মজা করছিস?" মা হাসছিল,কারণ তিনি ধরেই নিয়েছিলেন তাঁর ছেলে হারতে পারে না।
.
কিছু হারাই নি তো! হারানোর অভ্যাসটা কম। কিছু হারালে তাই মেনে নেওয়াটাও অসাধ্য হয়ে যায়।ছোটবেলায় হারানো মানে বুঝতাম ছাতা-জুতা-স্যান্ডেল-কলম এসব হারিয়ে যাওয়া। এসব হারিয়ে পথে দাড়িঁয়ে কাদঁতে হতো না, হারানোর আগে বাবা নতুন জোড়া এনে দিতেন। আজ এমন একটা জিনিস হারিয়েছি যেটা বাবা চাইলেই এনে দিতে পারবেন না, অথচ তারা এই একটাতেই চেষ্টা কম করেনি যাতে হারিয়ে না যায়। আজ এমন একটা জিনিস হারিয়েছি যেটা আমি কখনো চাই নি। ডেডবডি,লাশের সাথে কথা বলা এসব আমার ভালো লাগে না। আমার ভালো লাগে নিজের সাথে কথা বলতে,অসহায়-পীড়িত-দলিতদের সাথে কথা বলতে কিংবা মনভাঙ্গা পাখিটার সাথে কথা বলতে,তাদের বুঝতে,তাদের বুঝাতে আর মনের ক্ষতটাকে সরিয়ে দিতে।
.
এটা যদি আমেরিকা বা কানাডা হতো আমার কোনো কষ্ট থাকত না। সেখানে আমার প্রাপ্ত-অপ্রাপ্তি কোনো কিছুতেই কারো কিছু এসে যায় না। এটা বাংলাদেশ।মেডিকেলে না টিকে আমার কোনো কষ্ট হয় নি। আমার কষ্ট হয়েছিল মুহুর্তেই রুদ্ধ হয়ে যাওয়া কন্ঠটা শুনে। খুব কষ্ট পেয়েছি যখন শুনেছি আমার ব্যর্থতার আনন্দে কেউ রাতভর পার্টি করেছে!! খুব অবাক হয়েছি পাশের মানুষদের দৃষ্টির সংকীর্ণতা দেখে। কষ্ট হয়েছিল যখন বাবা বলেছিল, "প্রশ্নগুলো কি বইয়ের বাইর থেকে আসছিল?" বাবাকে কেমনে বুঝাই,বইয়ের বাইর থেকে আসা সব প্রশ্ন তো পেরেছি,কিন্তু মেডিকেল কোচিং করা ছেলেটা বইয়ের যে লাইনটা পড়ে আমরা সেটা স্কিপ করে বাকিগুলা পড়ি। কাগজের দুই পিটকে আমি এক করি কীভাবে? এক বাড়ির সবগুলো মেয়েকে তো আমি বিয়ে করতে পারি না!!
.
আমার বংশে এতগুলো অশিক্ষিত ছিলো মেডিকেল রেজাল্টের আগে জানতাম না। তারা বলে,"কীসের ইন্জ্ঞিনিয়ারিং?" ডাক্তার মানে কত টাকা, কি দাম, কত সম্মান........হাবিজাবি কত কি!! হলো না!"
.
দুনিয়ার সব সমস্যার বড় সমস্যা হল বয়সে বড়রা মনে করে ছোটরা বুঝে কম। প্রকৃত সত্য হল ছোটরা অনেকসময় বড়দের চেয়ে বেশি বোঝে। বড়রা সেটা জানতেও চায় না,বুঝতেও চায় না।
.
ভাউ,আপনাকে অতশত বোঝানোর টাইম আমার নাই।অপেক্ষা করুন। আমি আমিরুল। আমাকে আমার মত হতে দিন। অল্প-একটু ধৈর্য্য ধরুন।
.
মা খুব আগ্রহে ছিল। তাকে ফোন করে সহজভাবে বললাম- "টিকি নাই!" মা বিশ্বাস করে না। বলে, "মজা করছিস?" মা হাসছিল,কারণ তিনি ধরেই নিয়েছিলেন তাঁর ছেলে হারতে পারে না।
.
কিছু হারাই নি তো! হারানোর অভ্যাসটা কম। কিছু হারালে তাই মেনে নেওয়াটাও অসাধ্য হয়ে যায়।ছোটবেলায় হারানো মানে বুঝতাম ছাতা-জুতা-স্যান্ডেল-কলম এসব হারিয়ে যাওয়া। এসব হারিয়ে পথে দাড়িঁয়ে কাদঁতে হতো না, হারানোর আগে বাবা নতুন জোড়া এনে দিতেন। আজ এমন একটা জিনিস হারিয়েছি যেটা বাবা চাইলেই এনে দিতে পারবেন না, অথচ তারা এই একটাতেই চেষ্টা কম করেনি যাতে হারিয়ে না যায়। আজ এমন একটা জিনিস হারিয়েছি যেটা আমি কখনো চাই নি। ডেডবডি,লাশের সাথে কথা বলা এসব আমার ভালো লাগে না। আমার ভালো লাগে নিজের সাথে কথা বলতে,অসহায়-পীড়িত-দলিতদের সাথে কথা বলতে কিংবা মনভাঙ্গা পাখিটার সাথে কথা বলতে,তাদের বুঝতে,তাদের বুঝাতে আর মনের ক্ষতটাকে সরিয়ে দিতে।
.
এটা যদি আমেরিকা বা কানাডা হতো আমার কোনো কষ্ট থাকত না। সেখানে আমার প্রাপ্ত-অপ্রাপ্তি কোনো কিছুতেই কারো কিছু এসে যায় না। এটা বাংলাদেশ।মেডিকেলে না টিকে আমার কোনো কষ্ট হয় নি। আমার কষ্ট হয়েছিল মুহুর্তেই রুদ্ধ হয়ে যাওয়া কন্ঠটা শুনে। খুব কষ্ট পেয়েছি যখন শুনেছি আমার ব্যর্থতার আনন্দে কেউ রাতভর পার্টি করেছে!! খুব অবাক হয়েছি পাশের মানুষদের দৃষ্টির সংকীর্ণতা দেখে। কষ্ট হয়েছিল যখন বাবা বলেছিল, "প্রশ্নগুলো কি বইয়ের বাইর থেকে আসছিল?" বাবাকে কেমনে বুঝাই,বইয়ের বাইর থেকে আসা সব প্রশ্ন তো পেরেছি,কিন্তু মেডিকেল কোচিং করা ছেলেটা বইয়ের যে লাইনটা পড়ে আমরা সেটা স্কিপ করে বাকিগুলা পড়ি। কাগজের দুই পিটকে আমি এক করি কীভাবে? এক বাড়ির সবগুলো মেয়েকে তো আমি বিয়ে করতে পারি না!!
.
আমার বংশে এতগুলো অশিক্ষিত ছিলো মেডিকেল রেজাল্টের আগে জানতাম না। তারা বলে,"কীসের ইন্জ্ঞিনিয়ারিং?" ডাক্তার মানে কত টাকা, কি দাম, কত সম্মান........হাবিজাবি কত কি!! হলো না!"
.
দুনিয়ার সব সমস্যার বড় সমস্যা হল বয়সে বড়রা মনে করে ছোটরা বুঝে কম। প্রকৃত সত্য হল ছোটরা অনেকসময় বড়দের চেয়ে বেশি বোঝে। বড়রা সেটা জানতেও চায় না,বুঝতেও চায় না।
.
ভাউ,আপনাকে অতশত বোঝানোর টাইম আমার নাই।অপেক্ষা করুন। আমি আমিরুল। আমাকে আমার মত হতে দিন। অল্প-একটু ধৈর্য্য ধরুন।
তুরুপের টেক্কা টা কি আমি জমা রাখিনি?? !!
২২ অক্টোবর, ২০১৬
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন