তখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার। মন আমার রোমান্সে ভরপুর! কমার্সের এক গেদি আমাকে এসে বলল, তুমি কারো সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে চাও? হৃদয়ে আমার দোলা দিয়ে গেল!
জিজ্ঞেস করলাম, কার সাথে?
- আছে একজন, আমাদের ব্যাচে, কমার্সে, ও তোমাকে খুব পছন্দ করে।
- (সায়েন্স ডিমান্ড ছিল। তবুও বললাম) তাই? (
), কবে থেকে?


- একদম প্রথম দিন থেকেই!
- তিন মাস ধরে আমার উপরে কেউ ক্রাশ খেয়ে বসে আছে আর আমি জানিই না! 

- চাইলে আমি কথা বলি, ও তোমার সাথে কথা বলুক।
- আচ্ছা! (একটা হার্ট বিট মিস হওয়ার ইমো হপে)
😂
- আচ্ছা! (একটা হার্ট বিট মিস হওয়ার ইমো হপে)

একদিন ক্লাস শেষে, আমি কলেজ মাঠে, ওই মেয়ের সখিরা তাকে ঠেলে পাঠালো আমার কাছে।
সে আসিলো
, কিছুক্ষণ থাকিয়া কোন কথা না বলিয়াই আবার এক দৌড়ে ফিরে গেল সখিদের কাছে।

( চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কোনো সুবিশাল সুবিখ্যাত কলেজে পড়া কোনো মেয়ের কাছে এমন আচরণ আমাকে যানপরনাই অবাক করে।)
যেন বাংলা সিনেমা দেখলাম, এত লজ্জা, আহ! উহাই শেষ, এরপর সে লজ্জায় আর আমার সামনেই আসে নাই!
এইভাবেই আমি ছ্যাকা খাইলাম , এমন একজনের কাছে , যে আমাকে ভালবেসেছে কলেজ জীবনের একদম প্রথম দিন থেকে! 


হয়ত আজও সে আমায় বালুবাসে! 

--------------------------------------------------------------------------------------------------
ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার। ক্লাস নাইনের এক গেদি এসে আমাকে বলল, ভাইয়া আপনি ফ্রেন্ডশিপ করবেন?
(একটা হার্ট বিট মিস হওয়ার ইমো হপে
)

জিজ্ঞেস করলাম, কে?
সে আমাকে একটা চিঠি দিল!
(আরেকটা হার্ট বিট মিস হওয়ার ইমো হপে)
চিঠির মোটামুটি সারমর্ম - এই পর্যন্ত অনেকেই আমাকে ফ্রেন্ডশিপের আবেদন জানিয়েছে, এই প্রথম আমি কাউকে নিজে থেকে ফ্রেন্ডশিপের আবেদন জানাচ্ছি।
একটু অবাক লাগল, কলেজ বিল্ডিং আর স্কুল বিল্ডিংয়ের মাঝে বিশাল মাঠ, স্কুল বিল্ডিংয়ে আমাদের যাওয়া পড়ে না, কিন্তু সে আমাকে খুঁজে পেল কিভাবে?
বলে রাখি, আমার কাছে তখনো ফ্রেন্ডশীপের অন্য মানে ছিল। সেসময়ে কোনো মেয়ের সাথে ফ্রেন্ডশীপ, লা হাওলা আলা কুআ'ত!
যাই হোক, আমি চিঠির উত্তরে এইসব ফ্রেন্ডশিপের ক্ষতিকর বিষয় তুলে ধরে লিখে তাহার বান্ধবি মারফত পাঠাইলাম।
পরদিন তাহার বান্ধবী আমাকে আরেকটা চিঠি দিল -
"আপনি এত নীচ, আপনার মন এত ছোট, আমি ফ্রেন্ডশিপের কথা বললাম আর আপনি এটাকে এভাবে দেখলেন!?"
"আপনি এত নীচ, আপনার মন এত ছোট, আমি ফ্রেন্ডশিপের কথা বললাম আর আপনি এটাকে এভাবে দেখলেন!?"
আমি বিহ্বল হয়ে গেলুম, কি লিখিলুম, আর সে উহাকে কি ইন্টারপ্রিট করিল!
গায়ে আমার আগুন।
😡


আরেকটা চিঠি লিখলাম, এত কঠিন ভাষায় যে আশা করেছিলাম এরপর সে আমাকে আর কোন চিঠিই দেবে না। ( কি লিখেছিলাম সেগুলো আর মনে নেই )
এরপর আবার চিঠি, তাহার ক্লাসমেট বন্ধু মারফত -
"ভাইয়া, আসলে আপনার চিঠি পড়ার পর থেকে এই ফ্রেন্ডশিপের প্রতি আমারও আগ্রহ নষ্ট হয়ে গেছে, আমার কাছেও এখন মনে হচ্ছে এসব ভাল না!"
আহ!! এইভাবে একটা মেয়ের ফ্রেন্ডশিপের আগ্রহে ঠাডা ফেললাম আমি? জাতি কি এমন রোবট চেয়েছিল! 

যদিও এহেন ব্যাপারগুলো এখানেই শেষ। এর পর থেকে ইতিহাস! কাউকে রিকুয়েস্ট না দিই, কারো রিকুয়েস্ট ফেরত দেয়ার মত উদারতা আর দেখাই নি। একটা আম বড় হয়ে ডুমুর হয়ে যায় না সত্য, তবে স্বাদটা ঠিকই পাল্টে যায়। 

--------------------------------------------------------------------------------------------------
আমিরুল ইসলাম
০৫. ০৮. ২০১৭
আমিরুল ইসলাম
০৫. ০৮. ২০১৭